যুক্তরাজ্যে ইকুয়েডরের দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা সাড়াজাগানো উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের পাসপোর্ট বৈধ বলে নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। এর ফলে অ্যাসাঞ্জ তাঁর নিজ দেশ অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যেতে পারবেন।
অলাভজনক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান উইকিলিকস যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের কোটি কোটি অতি সংবেদনশীল ও গোপন নথি ফাঁস করে বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের রোষানলে পড়ে উইকিলিকসের প্রধান অ্যাসাঞ্জ। গ্রেপ্তার ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ ঠেকাতে ২০১২ সালে লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নেন তিনি। এরপর থেকেই তিনি সেখানে রয়েছেন। তবে সম্প্রতি অ্যাসাঞ্জ ও ইকুয়েডরের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। ফলে অ্যাসাঞ্জ আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ইকুয়েডর তাঁর রাজনৈতিক আশ্রয়ের ইতি টেনে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দিতে চায়।
অ্যাসাঞ্জের পুরোনো পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা হয়। তবে বিষয়টি গতকাল শনিবার পর্যন্ত কেউ জানতেন না। গত বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার সিনেটে অ্যাসাঞ্জের বিষয়ে এক শুনানি হয়। সিনেটকে দেশটির পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যবিষয়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বলেন, অ্যাসাঞ্জের বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে। গত অক্টোবরে তাঁর পাসপোর্ট নবায়ন করা হয়। শুনানির সময় সেন্টার অ্যালায়েন্স দলের সিনেটর রেক্স প্যাট্রিক ওই বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চান, অ্যাসাঞ্জ দূতাবাস ছাড়লে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে কী ধরনের আলোচনা হয়েছে? সেই প্রশ্নের জবাবে বিভাগের প্রধান আইন কর্মকর্তা জেমস লারসেন বলেন, অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো পদক্ষেপের বিষয়ে তিনি অবগত নন। এ বিষয়ে কোনো আলোচনাও হয়নি।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, তাঁদের কেন্দ্রীয় সরকারের কৌঁসুলিরা অ্যাসাঞ্জ ও উইকিলিকসের বিরুদ্ধে একটি দীর্ঘ ফৌজদারি তদন্ত শুরু করেছেন।
অ্যাসাঞ্জের সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা মনে করেন, অ্যাসাঞ্জ দূতাবাস ত্যাগ করলে যুক্তরাষ্ট্র তাঁর প্রত্যর্পণের বিষয়ে চেষ্টা করবে।
বৃহস্পতিবার টুইটারে ডিফেন্ড অ্যাসাঞ্জ ক্যাম্পেইন নামের এক সংগঠন বলেছে, ইরাক যুদ্ধ নিয়ে সত্য প্রকাশ করায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তার ও প্রত্যর্পণের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তিনি ২০১৯ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন বলেও দাবি করে সংগঠনটি।