গত বছর রাখাইনে হিন্দুদের একটি গ্রামে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হাতে বহু হিন্দু নারী, পুরুষ এবং শিশু নিহত হয়েছে। সম্প্রতি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক নতুন প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) হাতে গত বছরের অাগস্টে রাখাইনে শিশুসহ প্রায় ১শ জন হিন্দু নিহত হয়েছে।
গত বছর বেশ কয়েকটি চেকপোস্টে হামলার জন্য আরাকান স্যালভেশন আর্মিকে (আরসা) দায়ী করেছে মিয়ানমার সরকার। এসব হামলার পর পরই রাখাইনে অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
অভিযানের নামে সেনাবাহিনী ওই অঞ্চলের রোহিঙ্গাদের হত্যা, নির্যাতন ও নিপীড়ন শুরু করে। সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা নিজেদের বাড়ি-ঘর থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
অ্যামনেস্টির এক খবরে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের মাঝামাঝিতে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষ বাধে আরসার। ওই একই সময়ে আরসা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো বেশ কিছু ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তারা বেআইনী হত্যাকাণ্ড এবং লোকজনকে অপহরণ করেছে।
অ্যামনেস্টির ক্রাইসিস রেসপন্স পরিচালক তিরানা হাসান বলেন, আরসার কর্মকাণ্ডের নৃশংসতার দিকটি উপেক্ষা করে যাওয়া খুবই কঠিন। তাদের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া যেসব লোকজনের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে, তাদের ওপর এই বর্বরতার অবিশ্বাস্য ছাপ রয়ে গেছে।
আরসার হাত থেকে বেঁচে যাওয়ারা অ্যামনেস্টিকে জানান, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট আরসার যোদ্ধারা উত্তরাঞ্চলীয় মাওংদাও পৌরসভার একটি হিন্দু গ্রামে হামলা চালায়। ৬৯ জন নারী, পুরুষ এবং শিশু আরসার হামলার শিকার হয়। এদের মধ্যে অধিকাংশকেই হত্যা করে আরসার বিদ্রোহীরা।
ওই একই দিনে একটি হিন্দু সম্প্রদায়ের ৪৬ জন সদস্য নিখোঁজ হয়। এরপর তাদের আর কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে তারা আরসার হাতে নিহত হয়েছে। অ্যামনেস্টি অভিযোগ করে বলেছে, প্রায় ৯৯ জনকে হয়তো হত্যা করা হয়েছে।
আরসার সদস্যরা বর্বর এবং অনৈতিকভাবে হিন্দু নারী, পুরুষ এবং শিশুদের হত্যার আগে গ্রামে গ্রামে বাড়ি-ঘর লুট করেছে। তিরানা হাসান বলেন, এই জঘন্য অপরাধের শাস্তি হওয়া উচিত।