রশু রাতে কারাবাও কাপের ফাইনালে চেলসি-ম্যানচেস্টার সিটি ম্যাচ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ কথাটাই সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে। সেটি ম্যাচের ফল নিয়ে নয় চেলসি গোলরক্ষক কেপা আরিজাবালাগা ও দলটির কোচ মরিজিও সারির অদৃশ্য মারামারি নিয়ে! পেনাল্টি শুটআউটের আগে গোলরক্ষক কেপাকে তুলে ‘পেনাল্টি বিশেষজ্ঞ’ উইলি ক্যাবায়েরোকে মাঠে নামাতে চেয়েছিলেন সারি। কিন্তু কেপার যে কোচের কথা শোনার বিন্দুমাত্র ইচ্ছাও ছিল না।
সারি ও সহকারী কোচ জিয়ানফ্রাঙ্কো জোলার বারবার বলা সত্ত্বেও মাঠ থেকে উঠে আসতে অস্বীকৃতি জানান কেপা। শেষ পর্যন্ত এই গোলরক্ষক মাঠ ছাড়েননি আর এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কী হইচই! বেশির ভাগ ফুটবলপ্রেমীরই মতামত, এমন অদ্ভুতুড়ে ঘটনা এর আগে কখনো দেখিনি। ভুল। কোচের নির্দেশ অমান্য করে মাঠ না ছাড়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। একেবারে বিরল না হলেও কেপার পথে এর আগেই হেঁটেছেন বেশ কজন ফুটবলার। তাঁদের মধ্যে আছেন কিংবদন্তিও— লিওনেল মেসি!
পাঁচ বছর আগের ঘটনা। ২০১৪ লা লিগায় এইবারের বিপক্ষে ম্যাচে এমন কাণ্ড-ই ঘটিয়েছিলেন মেসি। লুইস এনরিকে তখন বার্সেলোনার কোচ। ৭৫ মিনিটে মেসিকে মাঠ থেকে তুলে আনার সিদ্ধান্ত নেন এনরিকে। কিন্তু মেসি কোচের কথা শোনেননি। বুড়ো আঙুল উঁচিয়ে এই আর্জেন্টাইন কোচকে বোঝান, সব ঠিক আছে। মাঠ ছাড়ার দরকার নেই। বার্সা তখন ম্যাচে ৩-০ গোলে এগিয়ে। আর ঠিক তার আগের মিনিটেই গোল (৭৪ মিনিট) পেয়েছেন মেসি। সব মিলিয়ে দলের সেরা খেলোয়াড়টিকে ১৫ মিনিট বিশ্রাম দিয়ে মুনির এল হাদ্দাদিকে মাঠে নামাতে চেয়েছিলেন কোচ। কিন্তু মেসি কোচের কথা না শুনে থেকে যান মাঠে। হতাশ এনরিকের সারির মতো মেজাজ না হারালেও বুঝিয়ে দিয়েছিলেন মেসির অবাধ্যতা তাঁর পছন্দ হয়নি। মেসির বদলে শেষ পর্যন্ত নেইমারকে তুলে মুনির এল হাদ্দাদিকে মাঠে নামান এনরিকে।
ম্যাচ শেষে এই ঘটনাকে আর মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগ দেননি এনরিকে। তবে বুঝিয়ে দেন মেসির ইচ্ছাতেই তিনি নিজের পছন্দমতো খেলোয়াড় বদলি করাতে পারেননি। এনরিকে বলেছিলেন,‘যা ঘটেছে তা বহু আঙ্গিকেই বর্ণনা করা যায়। এটি নির্ভর করছে কে এটি করেছে তার ওপর। আমি শুধু নিজের কাজটার ব্যাখ্যা করতে পারি।’
মেসি ছাড়াও কোচের বদলির নির্দেশ অমান্য করে মাঠে থেকে যাওয়ার অদ্ভুতুড়ে নজির গড়েছেন সোয়ানসি সিটির সাবেক সুইস গোলরক্ষক লুকাস ফ্যাবিনিস্কি। কার্লোস তেভেজের ঘটনাটা একটু ভিন্ন। ম্যানচেস্টার সিটিতে থাকতে ২০১১ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে কোচের নির্দেশ অমান্য করে মাঠে নামেননি এই আর্জেন্টাইন। এ ছাড়া গত বিশ্বকাপে ক্রোয়াশিয়ার নিকোলা কালিনিচও নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে একই কাণ্ড ঘটান।